রামগঞ্জ পৌর মেয়রের দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে মন্ত্রনালয়ে অভিযোগ” তদন্তের বিষয় চিঠি প্রদান ।

 

রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতাঃ লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ পৌর মেয়র আবুল খায়ের পাটোয়ারী বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে সরকারী রাজস্ব আদায়ে অবহেলা, ভূয়া প্রকল্প, কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে অশালীন আচরন ও হুমকী ধমকী, কর্মকর্তা কর্মকাচাদের ব্যাংকের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা আত্নসাৎ চেষ্টাসহ ১২টি অনিয়ম ও দূর্নীতির উল্লেখ্য করে চলতি মাসের বৃহস্পতিবার(৫ মে) লিখিত অভিযোগ করেন পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাসুদ আলম৷ এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশক্রমে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব প্রাপ্ত লক্ষীপুর জেলা এডিসি জেনারেল (ডিডি) নুরে আলম তদন্ত করবেন বলে চিঠি প্রদান করছেন বলে নিশ্চিত করেন পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ আলম৷
অভিযোগ ও সূত্রে জানা যায়, মেয়র আবুল খায়ের পাটোয়ারী দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে মাত্রারিক্ত ভাবে একরোখাভাব, অশালীন আচরন, অর্থ আত্নসাৎ ও দূর্নীতি গ্রস্ত হয়ে পড়ে৷ তিনি পৌরসভা কার্যালয়টিকে নিজের ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান হিসেবে মনে করে সরকারের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ইচ্ছামত পৌরসভা পরিচালনা করে আসছেন৷ ১/ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ন্যায্য পাওনা ২০২১সালের ঈদুল আযহা ও ২০২২ সালের ঈদুল ফিতরের উৎসব ভাতা, বাংলা ১৪২৯ সালের বৈশাখী ভাতা, ৩/৪ মাস করে বেতন ভাতা, ২/৩ টি শ্রান্তি বিনোদন ভাতা, ১৪/১৫ মাস পি.এফ ও জি.এফ এর অর্থ ও বদলীকৃতদের কর্মকালীন বেতনসহ জাতীয় ভাতা পরিশোধ না করে তাদের সাথে অশালীন আচরন ও বদলীর হুমকী প্রদান করেন৷ চলতি মাসে বৃহস্পতিবার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ আলম মেয়রের দেওয়া ভুয়া অস্ত্বিত্বহীন প্রায় ১৯ টি প্রকল্প অনুমোদনে স্বাক্ষর না করায় মেয়র তিনি পৌর নির্বাহী কর্মকর্তাকে ১০ মিনিটিরে আলটিমেটাম দিয়ে বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে নাজেহাল করা চেষ্টা করেন৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মচারী জানান, মেয়র সবসময় অশালীন আচরন করে কথায় কথায় বদলির হুমকী দেন৷
২/ মেয়র কৌশলে পূর্বের ইজারা দাতার আঁতাত করে রামগঞ্জ মাছ বাজার ও কাঁচা বাজার, বাস ষ্ট্যান্ডসহ ৫টি গুরুত্বপূর্ণ স্থান ইজারা দেননি৷ ফলে পৌরসভার প্রায় অর্ধকোটি টাকা সরকারী রাজস্ব আদায় হয়নি ৷ অথচয় স্থান্তরিত বাইপাস সড়কের রামগঞ্জ শিশু পার্ক সংলগ্ন মাছ বাজার ও কাচা বাজার পৌরসভার অর্থায়নে নির্মান করা হয় এবং গত অর্থ বছরে ১১ লক্ষ টাকা ইজারা প্রদান করে৷ এভাবে অন্যান্য স্থানগুলো ইজারা না দিয়ে অর্ধকোটি টাকা রাজস্ত অনাদায়ে ব্যক্তিগত স্বার্থে অনিয়ম ও দূর্নীতির আশ্রয় নেন৷
৩/ পৌর সভা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গ্রাচুইটির ৫৪ লক্ষ আত্নসাতের উদ্দেশ্যে ওয়ান ব্যাংক রামগঞ্জ শাখার ম্যানেজারের সাথে যোগসাজসে জালিয়াতির মাধ্যমে উত্তোলন করে নিয়ে যায়৷ পরবর্তিতে বিষয়টি কর্মকর্তা কর্মচারীরা জানতে পেরে প্রতিবাদ করলে তিনদিন পর প্রত্যেকের একাউন্টে ফেরত দেন৷
৪/ পৌর বিএমডিএফ মার্কেটি ২০২১ সালে ঠিকারদার প্রতিষ্ঠান থেকে বুঝিয়ে নেয়৷ কিন্তু মেয়রেে ব্যক্তিগত স্বার্থে মার্কেটের দোকান বরাদ্ধ না দেওয়ায় এক বছর ভাড়া বাবত পৌরসভার প্রায় এক কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব আদায় হয়নি৷
৫/ শিশু পার্ক সংলগ্ন ওয়াদা সড়কের বেড়িবাঁধের পাশে বেদে সম্পদায়দের শিশুদের জন্য স্কুল ভবন নির্মানে মেয়র কোন বিধি বিধান তোয়াক্ক না পৌরসভা থেকে ৬ লক্ষ টাকা ব্যয় করে এবং পৌর সভা থেকে ১লক্ষ ৭৬ টাকা কাবিখা বরাদ্ধ দেন৷ ৷
৬/ সোনাপুর চৌরাস্তা হতে সিএনজি ষ্ট্যান্ড,রামগঞ্জ চৌরাস্তা থেকে সিএনজি ষ্ট্যান্ড, আউগনখিল মোল্লাবাড়ির সামনের রাস্তা,কাজিরখিল বাস ষ্ট্যান্ড রাস্তা,রামগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তা, রামগঞ্জ দক্ষিন বাজার থেকে সোনাপুর মোরগ বাজার রাস্তা এভাবে ১৯ টি ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য কাজ না করে, অস্তিত্বহীন, ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করা সব প্রক্রিয়া শেষ করে ৷ কিন্তু পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা ফাইলে স্বাক্ষর না করায় তাকে হুমকী ধমকী ও নাজেহাল করার চেষ্টা করে৷ আই ইউ আই ডি পি প্রকল্পে কাজ না করেও শান্ত এন্টারপ্রাইজ ও সায়মা এন্টারপ্রাইজ বিল পরিশোধ করে৷ এ সব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে মেয়রের লিয়াজো রয়েছে বলে বিশ্বস্ত্ব সূত্রে জানা যায়৷
৭/ সরকারী কম্বল শীতকালে বিতরন না করে এবং ঈদে সরকারীভাবে গরীব অসহায়েদর চাল বিতরন করে নাই পরে বিষয়টি জানাজানি হলে দ্রুত চলতি মাসের বৃহস্পতিবার ১২ মে সরকারী হাসপাতাল ও বিভিন্ন এতিখানায় কম্বল গুলি বিতরন করে দেয়৷ চাল ও বিতরন করছে বলে জানা যায়৷
পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ আলম জানান, মেয়র পৌরসভাকে ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের হিসেবে মনে করে কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে অশালীন আচরন, তাদের ন্যায্য দাবী আদায়ে হুমকী ধমকী এবং ব্যাপক অনিয়ম করে আসছে৷ এতে আমি প্রতিবাদ করলে আমাকেও হুমকী ধমকী ও বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে নাজেহাল করা চেষ্টা করে৷ এ ব্যাপারে আমি ১২টি অনিয়মের উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মহোদয়ের কাছে লিখিত আবেদন করেছি৷