থার্টি ফার্স্ট নাইটে ঘরোয়া অনুষ্ঠানেও ডিএমপি’র অনুমতি লাগবে, রাজধানীতে অ্যালকোহল টেস্টের কিটসহ পুলিশের বিশেশ টিম থাকবে। 

রাজধানীতে থার্টি ফার্স্ট নাইটে ঘরোয়াভাবে কেউ কোনো অনুষ্ঠান করতে চাইলেও পুলিশকে অবহিত করতে হবে। সেখানে পুলিশ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। এবারও উন্মুক্ত স্থানে সবধরনের অনুষ্ঠান, নাচ-গান ও কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অনুমতি থাকছে না।

সোমবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন: নববর্ষ উদযাপনকালে ঢাকা মহানগরীতে নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, ভবনের ছাদে এবং প্রকাশ্যে স্থানে কোনো ধরনের জমায়েত, সমাবেশ, উৎসব করা যাবে না। এছাড়া কোথাও কোনো ধরনের আতশবাজি-পটকা ফোটানো যাবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পর স্টিকার ও পরিচয়পত্র ছাড়া বহিরাগত কোনো ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গাড়ি নির্ধারিত সময়ের পর পরিচয় দিয়ে নীলক্ষেত এবং শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। তিনি বলেন: মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সন্ধ্যা ৬টার পর ঢাকা মহানগরীর সব বার বন্ধ থাকবে। মাদকসেবনের বৈধতা ছাড়া কাউকে যেন পাঁচ তারকা হোটেলে অ্যালাও না করা হয় সে জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে হোটেল কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি ভোর ৬টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ, জনসমাবেশ ও উৎসবস্থলে লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্রও বহন করা জাবেনা। এবার মাদক সেবন করে কেউ বেপরোয়া যানবাহন চালালে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ডিএমপি। পাশাপাশি অ্যালকোহল টেস্টের জন্য গুলশান বনানী ও হাতিরঝিলসহ একাধিক এলাকায় কিটসহ পুলিশের বিশেষ টিম কাজ করবে। সুষ্ঠু বিনোদনের জন্য উন্মুক্ত স্থানে কোনো অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে অনুমতি কেন দেবে না ডিএমপি? এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন: নিরাপত্তাজনিত কারণেই মূলত উন্মুক্ত স্থানে অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। কারণ উন্মুক্ত স্থানে নিরাপত্তা বিধান করা একটু কঠিনই। এক্ষেত্রে ইনডোরে অনুষ্ঠানে উৎসাহিত করা হলেও, ইনডোরের ক্ষেত্রেও পুলিশকে অবহিত করতে হবে।থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনের ক্ষেত্রে কোনো হুমকি তৈরি করছে কিনা, জানতে চাইলে কমিশনার বলেন: সুস্পষ্ট হুমকি না থাকলেও উন্মুক্ত স্থানের ক্ষেত্রে তো প্রচ্ছন্ন হুমকি থাকে। সে জন্য উন্মুক্ত স্থানে কোনো অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না।ঢাবি ও বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা নিরাপত্তা শঙ্কা তৈরি করেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন: ঢাবিতে চাইলে পুলিশ যেতে পারে না। তবে সেখানে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা কাজ করছে ককটেল বিস্ফোরণে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য। আর বিএনপি পার্টি অফিসের সামনের সড়কও খুব ব্যস্ততম। অনেক যানবাহন সেখানে চলাচল করে। আমি সংশ্লিষ্ট এলাকার ডিসিকে নির্দেশনা দিয়েছে নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিএনপি পার্টি অফিস এলাকা পুরোটা যেন সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসা হয়।এছাড়া গুলশান এলাকায় প্রবেশের জন্য কাকলি ক্রসিং এবং আমতলী ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে। তবে নির্ধারিত সময়ের পর পরিচয় দিয়ে এ দুটি ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। একইভাবে সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় যেসব নাগরিক বসবাস করেন না তাদের ওইসব এলাকায় গমনের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।এবার রাত ৮টার পর হাতিরঝিল এলাকায় কাউকে অবস্থান করতে দেয়া হবে না। গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় বসবাসরত নাগরিকদের ৩১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাত ৮টার মধ্যে স্ব-স্ব এলাকায় ফেরার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।