দেশে বিভিন্ন স্থাপনা, সড়ক ও নামফলক থেকে স্বাধীনতাবিরোধীদের নাম মুছে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের নামে নামকরণ করতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
এ সংক্রান্ত চলমান একটি রিট মামলায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন প্রতিবেদন দেখে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়।
নির্দেশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে আগামী বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন দিতে বলেছে আদালত। পরে ২৫ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী আদেশের জন্য বিষয়টি আদালতের কার্যতালিকায় আসবে।
আদালতে রিট আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ কে রাশেদুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।
স্থানীয় সরকার সচিবের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আশরাফুল আলম। খুলনা সিটি মেয়রের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুর রশিদ।
অমিত দাশগুপ্ত পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীদের নামে থাকা স্থাপনা, সড়ক, অবকাঠামোর নামকরণের বিষয়টি নিয়ে ২০১২ সালে হাই কোর্টে রিট করেন মুনতাসীর মামুন ও শাহরিয়ার কবির।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ১৪ মে হাই কোর্ট রুল জারির পাশাপাশি স্থাপনা, সড়ক, অবকাঠামো থেকে স্বাধীনতাবিরোধীদের নাম মুছে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে নামকরণের অন্তবর্তী আদেশ দেয়।
আদালতের ওই নির্দেশ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না জানিয়ে ২০১৫ সালের ২৫ অগাস্ট আরেকটি আবেদন করেন রিট আবেদনকারীরা।
পরে ওই বছরের ২৯ নভেম্বর হাই কোর্ট স্বাধীনতা-বিরোধীদের নামে থাকা স্থাপনা, প্রতিষ্ঠান, সড়ক ও নামফলকের তালিকা জানতে চায়।
তার ধারাবাহিকতায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় প্রতিবেদন দিয়ে জানিয়েছে, তাদের মন্ত্রণালয়ের অধীনে যেসব স্থাপনা, প্রতিষ্ঠান, সড়ক ও নামফলক ছিল সেগুলো থেকে স্বাধীনতাবিরোধীদের নাম মুছে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে নামকরণ হয়েছে।
অমিত দাশগুপ্ত বলেন, কয়েকটি মন্ত্রণালয়- যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সমাজকল্যাণসহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে কিছু কিছু স্থাপনা, প্রতিষ্ঠান, সড়ক ও নামফলক রয়ে গেছে, যেগুলো থেকে নাম মুছে ফেলা সম্ভব হয়নি।
“সেগুলোর ব্যাপারে আদালত নির্দেশনা দিয়েছে, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে স্বাধীনতাবিরোধীদের নাম অপসারণ করে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের নামে নামকরণ করার জন্য।”
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দাখিল করা প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশে স্বাধীনতাবিরোধীদের নামে ৩০টি স্থাপনা, সড়ক ও নামফলক আছে।
এর মধ্যে ২২টির নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। ৮টির এখনও পরিবর্তন করা হয়নি।
এদিকে স্বাধীনতাবিরোধীদের নামে থাকা পাঁচটি কলেজের নাম পরিবর্তন করছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
বৃহস্পতিবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইতোমধ্যে একটি কলেজের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। বাকি চারটি কলেজের নাম পরিবর্তনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।