ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার মন্দবাগ এলাকায় তুর্ণা নিশীথা ও উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের মুখোমুখখি সংঘর্ষে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার মন্দবাগ এলাকায় তুর্ণা নিশীথা ও উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের মুখোমুখখি সংঘর্ষে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার (১১ নভেম্বর) দিবাগত রাত ২টা ৫৫ মিনিটে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- চাঁদপুর হাজীগঞ্জের পশ্চিম রাজারগাঁওয়ের মুজিবুল রহমান (৫৫), চাঁদপুরের কুলসুম বেগম (৩০), চাঁদপুরের হাইমচরের মরিয়ম (৪), চাঁদপুরের উত্তর বালিয়ার ফারজানা (১৫), চাঁদপুর সদরের ফারজানা (১৫), চাঁদপুরের হাইমচরের কাকলী (২০), হবিগঞ্জের রিপন মিয়া (২৫), হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের আল-আমিন (৩০), হবিগঞ্জের আনোয়ারপুরের আলী মোহাম্মদ ইউসুফ (৩২), হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের পিয়ারা বেগম (৩২), হবিগঞ্জের বানিচংয়ের আদিবা (২), হবিগঞ্জের ভোল্লার ইয়াছিন আরাফাত (১২), চুনারুরঘাটের তিরেরগাঁওয়ের সুজন আহমেদ (২৪), মৌলভীবাজারের জাহেদা খাতুন (৩০), ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের সোহামনি (৩), নোয়াখালীর মাইজদির রবি হরিজন (২৩)।

তুর্ণা নিশীথা চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার দিকে আর উদয়ন এক্সপ্রেস সিলেট থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেসের সঙ্গে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্না নিশিথা এক্সপ্রেসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুটি ট্রেনের কয়েকটি বগি দুমড়ে মুচড়ে যায়। তূর্ণা নিশীথা ট্রেন সিগন্যাল অমান্য করে সামনে চলে যাওয়ায় এই মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

স্টেশন সূত্রে জানা যায়, তূর্ণা নিশীথা ট্রেনকে মন্দবাগ রেলস্টেশনে দাঁড়ানোর জন্য সিগন্যাল দেওয়া হয়। ওই সিগন্যালে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস প্রধান লেন থেকে ১ নম্বর লাইনে যেতে শুরু করে। ট্রেনটির ছয়টি বগি ১ নম্বর লাইনে উঠতে পেরেছিল। অন্য বগিগুলো প্রধান লেনে থাকা অবস্থায় তূর্ণা নিশীথা সিগন্যাল অমান্য করে। এতেই দুর্ঘটনা ঘটে।

আহতদের কুমিল্লাসহ আশেপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে রেল ও জেলা প্রশাসনের ৫টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি তূর্ণা-নিশীথার চালক সিগন্যাল অমান্য করায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পর কারণ জানা যাবে।

তিনি আরও জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার মন্দবাগ এলাকায় তুর্ণা নিশীথা ও উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের মুখোমুখখি সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে এক লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আর আহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।

এর আগে রেল সচিব মো. মোফাজ্জেল হোসেন জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।

এ ঘটনায় তূর্ণা নিশীথার চালক তাছের উদ্দিন, সহকারী চালক অপু দে ও ওয়ার্কিং গার্ড আব্দুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।