বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এসপি হিসেবে মনিরুল ইসলামকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে এসপি অফিস থেকে বিদায় নেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এসপির ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত মনিরুল ইসলাম।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে এসপি হারুন অর রশীদকে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিদায় সংবর্ধনা দেয়া হয়।
বিদায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাবেক এসপি হারুন অর রশীদ বলেন, গত এক নভেম্বর শওকত আজিজ রাসেলের স্ত্রী ও সন্তানকে তুলে নিয়ে আসার বিষয়ে বলেন, গাড়ি তল্লাশি করে বিপুল পরিমাণ মাদক দ্রব্য পাওয়ার কারণে রাসেলের বাড়িতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি নিয়ে অভিযান চালানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদরে জন্য তার ছেলে ও স্ত্রী ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়েছিলো জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছি।
তিনি বলেন, আমার কোন সহকারীর মাথায় কেউ যদি অস্ত্র তাক করে ভয়ভীতি দেখায় আমারা কি তাকে আইনের আওতায় আনবো না? সে ক্ষেত্রে সে কত বড় ক্ষমতাশালী বা বড়লোক তা বিবেচনা করা হয়নি। অপরাধীকে অপরাধী হিসেবে আইনের আনা হয়েছে।
ওই ব্যবসায়ী কাছে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে এসপি হারুন অর রশীদ বলেন, অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা হওয়ার পরই তার বাড়িতে রেট করা হয়েছে। তিনি বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্তে বের হয়ে আসবে। এই কথা বলেই তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিনি কাজ করেছেন। তিনি বলেন, পুলিশের পক্ষে সবাইকে খুশি করা সম্ভাব না। যে কারণে অনেকেই খুশি ছিলোনা।
বিদায়ী সংবর্ধনায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, র্যাব১- সিও কাজী শামসের উদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাছুম, নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম, নুরে আলমসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, গত ২ নভেম্বর শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এস.পি হারুন অর রশিদ আকস্মিক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে গণমাধ্যমকে জানান, শুক্রবার মধ্য রাতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের সাইনবোর্ড এলাকায় শওকত আজিজ রাসেলের গাড়ি তল্লাশি করে বিপুল পরিমাণ মদ, বিয়ার ও গুলি জব্দসহ গাড়িচালককে আটক করার কথা। তবে তার বাড়িতে গিয়ে অভিযানের কথা সেদিন কিছুই বলেননি। এর পরদিন অভিযান ও আটকের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ গণমাধ্যমে ভাইরাল হলে ৩ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির আদেশে উপ-সচিব ধনঞ্জয় কুমার সাহা স্বাক্ষরিত এক আদেশে এস.পি হারুনকে পুলিশের সদর দপ্তরে টি আর শাখায় বদলি করা হয়।
এদিকে আজ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক মন্ত্রীসভার বৈঠক শেষে নারায়ণগঞ্জের এস.পি হারুনের ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন, এটি পুলিশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। হারুনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত শুরু হবে।