সব চেষ্টা ব্যর্থ ওমর ফারুক চৌধুরীর, সিদ্ধান্তে অনড় প্রধানমন্ত্রী , প্রধানমন্ত্রীর পারিবারিক সদস্য ও বিশ^স্ত রাজনৈতিক নেতাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন বলে দলের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য  জানিয়েছেন।

যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসে যুক্ত থাকার সুযোগ চাইছেন সংগঠনের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনুক‚ল্য পেতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পারিবারিক সদস্য ও বিশ^স্ত রাজনৈতিক নেতাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন বলে দলের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য  জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ওমর ফারুকের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

তার ব্যাপারে অনমনীয় অবস্থান স্পষ্ট করেছেন শেখ হাসিনা। তাকে ছাড়াই যুবলীগের জাতীয় কংগ্রেস সম্পন্ন করার ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই দিয়ে রেখেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। সভাপতিমÐলীর ওই সদস্য  আরও বলেন, যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেস নিয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা রবিবার বিকেলে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।

যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদের নেতৃত্বে সংগঠনটির প্রেসিডিয়ামের সদস্যরা থাকবেন ওই বৈঠকে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, গত বুধবার দুপুরে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ প্রেসিডিয়াম সদস্যের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকের অনুমতি নেওয়ার জন্য গণভবনে গেলে ওমর ফারুককে ছাড়া তাদের গণভবনে আসতে নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে ওমর ফারুকের গণভবনে প্রবেশের পাসও বাতিল করা হয়।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, চলমান দুর্নীতি ও ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে বিতর্কের মুখে পড়া যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারছেন না। চেয়ারম্যানকে বাইরে রেখে প্রস্তুতি

কমিটি গঠন করা হবে রবিবার। তিনি সম্মেলন সম্পন্ন করে বিদায় নেওয়ার সুযোগ চাইলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনড় অবস্থানের কারণে জাতীয় কংগ্রেসের কোনো প্রক্রিয়ায় ওমর ফারুকের থাকার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।

আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর তিন সদস্য  বলেন, যুবলীগের নেতা হওয়ার বয়সও নির্ধারণ করা হবে রবিবারের ওই বৈঠকে। তারা বলেন, চল্লিশ থেকে পয়তাল্লিশের ভেতরে যারা ক্লিন ইমেজধারী তারাই এবার আওয়ামী লীগের অন্যতম এ সহযোগী সংগঠনের নেতা হচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন, যুবলীগের বয়স নির্ধারণ করা হবে রবিবার গণভবনের বৈঠকে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলী আরেক সদস্য  বলেন, যুবলীগের বর্তমান কমিটি থেকে বেশিরভাগ নেতা এবার বাদ পড়বেন। চলমান দুর্নীতি ও ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে যুবলীগের নেতারাই বেশি ধরা খেয়েছেন।

তাই এ সংগঠনের নেতারা বাদের তালিকায় বেশি থাকবেন। তাছাড়া বয়সের কারণেও বাদ পড়বেন অনেক নেতা। যুবলীগের বেশিরভাগ নেতা পঞ্চাশ থেকে সত্তরের ভেতরে। এবার সেসব নেতার পদ পাওয়ার সুযোগ নেই বললেই চলে। সভাপতিমÐলীর ওই সদস্য আরও বলেন, যুবলীগের শীর্ষ নেতৃত্বসহ এই সংগঠনে এবার ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবার একক সিদ্ধান্তে এ সংগঠনের নেতা নির্বাচন করবেন। সবার বয়স যাতে পয়তাল্লিশের ভেতরে থাকে এ ব্যাপারটি খেয়াল করা হবে। বয়সের সীমা ঠিক করার আরেকটি অন্যতম কারণ যাতে নেতা যারা হবেন তাদের ভেতরে এবং সংগঠনের ভেতরে স্পিরিট থাকে।

আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর আরেক সদস্য  বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বজনদের ভেতরে অনেকেই যুবলীগের নেতা হতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু স্বজনদের ভেতর থেকে এবার এ সংগঠনে নেতা হওয়ার সুযোগ একেবারেই কম। সম্পাদকমণ্ডলীর ওই নেতা বলেন, ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের ভেতর থেকেই নেতা হওয়ার সম্ভাবনা এবার বেশি রয়েছে।

জানতে চাইলে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ  বলেন, রবিবার আগামী জাতীয় কংগ্রেসের বিষয়ে নেত্রীর গাইডলাইন নিতে গণভবনে যাব আমরা। ওইদিন সম্মেলন প্রস্তুতি অনেকদূর এগিয়ে যাবে। ওই বৈঠকে সংগঠনের চেয়ারম্যান উপস্থিত থাকবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চেয়ারম্যানের ব্যাপারে এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না।