বেসিক ব্যাংক চেয়ারম্যান বাচ্চুর যত অপকর্ম শত শত কাগুজে প্রতিষ্ঠানকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ ছাড় দেন বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু।

শত শত কাগুজে প্রতিষ্ঠানকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ ছাড় দেন বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু।বোর্ডের তোয়াক্কা না করেই সভা ডেকে অর্থ ছাড়ের অনুমতি দেয়ার রেকর্ডও রয়েছে তার। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বাচ্চুর নাম উঠে আসলেও নেয়া হয়নি কোনো পদক্ষেপ।
আব্দুল হাই বাচ্চু বেসিক ব্যাংক চেয়ারম্যান হওয়ার পর ২০০৯ সালে ১০ ডিসেম্বর ব্যাংকটির নতুন পর্ষদ গঠন করে সরকার। পরিচালনার দায়িত্ব পান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দুই পরিচালক সুভাশীষ বসু ও নিলুফার আহমেদ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রাজিয়া বেগম, বিসিক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব বিজয় ভট্টাচার্য। পরবর্তী সময়ে তারা বিভিন্ন দপ্তরে পদোন্নতি পেয়ে চলে যান। বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে তাদের দুদক কার্যালয়ে এনে বা অফিসে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। বেশিরভাগ জালিয়াতির ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয় আব্দুল হাই বাচ্চুর নাম।
অনুসন্ধানে উঠে আসে ভুয়া বোর্ড মিটিং ডেকে কোনো সদস্যের উপস্থিতি ছাড়াই বাচ্চু নিজে শত শত কাগুজে প্রতিষ্ঠানকে ঋণ ছাড় দেয়। এমনকি তৎকালীন পরিচালককে পদত্যাগে বাধ্য করে যে বিষয়ে বাংলাদেশে ব্যাংকে অভিযোগ করেন তিনি। বাচ্চুকে ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক সে সময় অর্থ মন্ত্রণালয়ে সুপারিশও করেন।
ইব্রাহিম খালিদ বলেন, তখন যিনি এমডি ছিলেন তাকে ভয় দেখিয়ে পদত্যাগ করাতে বাধ্য করেছেন। এটা অন রেকর্ড, এটা তিনি এসে কমপ্লেন করেছেন, গভর্নরকে কমপ্লেন করেছেন। একদিন একটা সভা দেখানো হয় বোর্ড মিটিংয়ের। যা আসলে অনুষ্ঠিতই হয়নি। একটা ভুয়া মিটিং ডেকে ২০০ এর মতো লোন ছাড় দেয়া হয়। যা পরবর্তী মিটিংয়ে ওই কার্যবিবরণীটি পাস করে দেন আব্দুল হাই বাচ্চু। এদিক থেকে বোর্ডের সদস্যরাও দায়ী। তবে মূল দায়িত্ব চেয়ারম্যানের।
এদিকে এত বড় মাপের দুর্নীতি তদন্তে কোনো সমঝোতা হলে দুদক প্রশ্নের মুখে পড়বে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টাকাটা এমন না যে চুনোপুঁটির বিষয়, এটা রুই কাতলার বিষয়। সংসদ থেকে শুরু করে সবাই কিন্তু একদিকেই নজর দিচ্ছে।  এটা দুদকের জন্য বড় ধরনের আস্থাহীনতার সঙ্কট সৃষ্টি করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে বেসিক ব্যাংকের মোট ঋণ বিতরণের পরিমান ছিল ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। ২০১৩ সালের মার্চে এ অঙ্ক দাঁড়ায় ৯ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা। সে সময়ে দেয়া ৬ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকার মধ্যে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকাই নিয়ম ভেঙে দেয়া হয়।